রঙের জীবন

সেরা গল্প : অসমাপ্ত ভালোবাসা || নির্ঝর মাহমুদ খান

-সজীব তুই কই রে?(নিলিমা) -জাহান্নামে কেন?(সজীব)

-তুই কি আমার উপর বিরক্ত হচ্ছিস? অনেকটা মন খারাপ করেই বললো নিলিমা

-না তা কেন?রাত ১২টার সময় ফোন দিয়ে বলছিস কই?

-না ঠিক আছে সরি রে

বলেই ফোনটা কেটে দিলো নিলিমা।

 

পরের দিন সজীব একটু তাড়াতাড়িই কলেজে আসলো।

কালকে রাতে রাগ করে কথা বলেছে। এখন রাগ না ভাঙ্গালে কি যে হবে? আল্লাহই জানে!

সে সব খানে খুঁজলো নিলিমাকে। কিন্তু কোথাও নেই!

খুব চিন্তা হচ্ছে সজীবের! মেয়েটা কালকে কি যেন বলতে চাইছিলো শুনলেই মনে হয় ভালো হতো!

না একটা ফোন করতেই হবে সেই দিকেও গুড়ে বালি ফোন টা সে বন্ধ করে রেখেছে।ফেবুতেও নাই ব্যপার কি কি হলো মেয়েটার?মেয়েটার পরিচয় না দিলে গল্পটা অসম্পূর্নই থেকে যায়।

পুরো নাম নাইমা জান্নাত নিলিমা। বাবা মার মার আদরের মেয়ে! সজীবদের পরিচয় ফেসবুকেই!মেয়েটাই সজীব কে এড দেয়! তারপর থেকেই শুরু হয় বন্ধুত্ব। যে সে বন্ধুত্ব না! মেয়েটা অনেক চঞ্চল,সারাদিন হাসি তামাশা, দুষ্টমি করেই দিন কাটতো তার!

কিন্তু কয়েক দিন থেকেই কেমন যেন আনমনা হয়ে

গেছে!

কারও সাথে তেমন কথা বলে না! সারাক্ষণ ঘরের এককোনে বসে থাকে আপন মনে!

আর কি যেন ভাবে!

কালকে রাতে সজীব কে ফোন করছিলো! কি যেন বলার জন্য কিন্তু ঘুম। থেকে উঠে অনেক

রাগ করে কথা বলে সজীব। সজীবের মাথায় নানান কথা ঘুরপাক খাচ্ছে। কি হলো মেয়েটার?

সেটা জানতেই হবে। কিন্তু কি করে? তার সাথে যোগাযোগের সব মাধ্যমই বন্ধ কেবল একটা মাধ্যম খোলা আছে সারাসরি তার বাসায় যেতে হবে!

কিন্তু এটা কি ঠিক হবে?

আজ সাত দিন পার হয়ে গেলো ওর কোন খবর নেই!

না আর বসে থাকলে হবে না!

বলেই ওঠে দাঁড়ালো সজীব। ওর বাসায় যেতে হবে। তাছাড়া কোন পথ নেই! ভাবতে ভাবতেই ওর বাসার দিকে রওনা হলো বাসার সামনে যেতেই মনটা কেমন জানি করে উঠলো! বুকের বামপাশটায় চিনচিন করে উঠলো। নাহ্ বাসা ঠিকই আছে!

তবুও দারোয়ান চাচার কাছ থেকে শুনে নেওয়া ভালো!

 

-চাচা একটু শুনবেন? (সজীব)

-কে বাবা তুমি? (দারোয়ান চাচা) -আমার নাম সজীব। আমি নিলিমার বন্ধু নিলিমা অনেক দিন ধরে কলেজে আসে নি তাই,,,,,,

-কথা গুলো শুনতেই চাচার চোখে পানি চিক চিক করতে লাগলো!

কোন কথা না বলেই গেট খুলে দিলো! বাসার ভিতরটা অনেক বড়। অবশ্য আগে কখনো আসি নি!

কিন্তু বাসাটা যেন কেমন ধু ধু করছে! ফুলের গাছগুলোর দিকে তাকালেই বুঝা যায় অনেক দিন ধরে পানি দেওয়া হয় নি গাছের গোড়ায়।তাই গাছ গুলো নিজের ক্ষমতা হারাচ্ছে দিন দিন! সজীব মনে মনে ভাবলো,, নিলিমা কি একটু পানিও দিতে পারে না? আজব মেয়ে তো! আস্ত আস্তে সামনের দিকে যাচ্চে সজীব। সামনে দেখতে পেলে একজন মধ্যে বয়স্ক মহিলা

বসে আছে। মনে হলো এটাই নিলিমার মা হবে!

 

-আন্টি(সজীব)

-কে বাবা তুমি? (মহিলা)

-আমি নিলিমার বন্ধু ও তো,,,,, কথাটা শেষ না করতেই মহিলাটা হাউ মাউ করে কেদে দিলো।

সজীব অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে।আছে। -নিলিমা আর নেই বাবা!

-নেই মানে আন্টি!

-গত সোমবারে নিলিমা,,,,,,,,,,,,,,­,,,,, বোঝতে আর বাকি রইলো না। অনেকক্ষন পর

-তোমার নাম কি বাবা?

-জ্বি সজীব

-ও তাহলে তোমার কথাই বলেছে তোমার জন্য একটা জিনিস ও রেখে গেছে! বলেছে তুমি আসলে দিতে।

বলেই ঘর থেকে একটা প্যাকেট এনে দিলো! প্যাকেট টা নেওয়ার ক্ষমতা টুকুও যেন হারিয়ে ফেলেছে!

পাথরের মত দাঁড়িয়ে আছে।

অনেক কষ্টে প্যাকেট টা খুলেই দেখলো একটা মাউথ অর্গান

আর একটা কাগজ

তাতে লেখা,,,,,,

বাঁচার অনেক ইচ্ছে ছিলো। এই কথা জানার পরও যে আমার দেহে ক্যান্সার। তোকে জানাই নি কষ্ট পাবি বলে ২৫ তারিখ তোর জন্মদিন!

হয়তো ওতো দিন আমি থাকবো না। তাই আগেই দিলাম।

মনে আছে তোকে ফোন করেছিলাম।? তুই রাগ করলি!

তাই বেচে থাকার ইচ্ছা টাও হারিয়ে ফেললাম। চলে গেলাম রে ভালো থাকিস!