ছড়া

দ্বিমুখী  || জহির রায়হান

জুতোজোড়া চকচকে খুব হাজার তিনেক টাকা দাম।
মাথায় করে রাখলে তারে,হবেই জানি খুব বদনাম।
ছোট্ট কালো টিপটার দাম সে আর এমন কতই-বা
অল্প হলেও খুব যতনে কপালে পায় তার শোভা।
জুতোজোড়া পায়ে মানায়,কপালেতে দেখো টিপ
যার জায়গাটা যেইখানেতে,সেইখানেতেই বেজায় ঠিক।

দুধওয়ালা দ্বারে দ্বারে আসে কাঁধে দুধ বয়ে।
মদ্যপায়ী মদের বোতল কোলে করে যায় নিয়ে
জল ঢেলে ওই মদের সাথে পিয়ে হারায় তাহার হুঁশ
জ্ঞান ফিরতেই সে দুধওয়ালার ঝারতে থাকে তিন পুরুষ
বলে,’ব্যাটা, জোচ্চোর রে তুই,দুধে ঢালিশ কত জল
গলা টিপে মারবো তোরে,জল দিবি না দুধে, বল?’
দুধের সাথে জল বেমানান,মদের সাথে ঠিক মানায়
হাতি যদিও যায় পেছনে,সমুখ-মশা ঠিক আটকায়। 

মোমের বাতি জ্বেলে স্মরে মরে যাওয়া লোকটারে
জন্মদিনের অনুষ্ঠানে মোম নিভিয়ে ছল করে।
যে গেছে তার জীবন শেষে তার কি মোমের আলো চাই?
জন্ম নিল যে শিশুটি তার জীবনে আলো নাই। 

‘জানোয়ারটা’গালি দিলে কেউ কি আছে খুশি হয়?
বাঘেরবাচ্চা বললে পরে তার দিলটা নাখোশ যে নয়।
তবে কি ভাই,জানোয়ার সব একেকটা যে পশু হয়,
বাঘেরবাচ্চা বীরের বাচ্চা,বাচ্চা সেটা পশুর নয়?