অণুগল্প

অনুগল্প : ঘুড়ি || নাদিরুজ্জামান মুকুল

 

আকাশ কত দূর! অথচ এর মাঝে ছুটে চলা সাদা মেঘগুলো কত স্বাধীন। ইচ্ছেমত না মানে মন খুলে উড়ে উড়ে চারদিকটা চষে বেড়ায়। হিংসে হয়,,,,,,

ইস্ আমিও যদি এভাবে উড়ে যেতে পারতাম, আকাশটাকে যে আমার ছুঁয়ে দেখার অনেক স্বাদ। ওই লাটাই থেকে কেউ যদি আমার লাগামটা ছাড়িয়ে দিত, কত্ত মজা হত তাইনা?

আকাশের নীল বাতাসের কনকনে সুরে আমি জীবনের আহ্লাদ পূর্ণ করতাম। আমি ঘুড়ি আমার নিজস্ব স্বাধীনতাটা অন্যের ইচ্ছের মধ্যেই আটকে থাকে, থাকবে আজীবন! অথচ একটা খটকা ঝড় ইচ্ছে করলেই আমাকে মুক্ত করতে পারে। কিন্তু ভয় হয় ঝড়ের তো সীমাবদ্ধতা নেই, হয়তো আমাকে মুক্ত করতে গিয়ে আমার দেহটাই দুমড়ে মুচড়ে শেষ করে দিতে পারে। তাই আমি আমার স্বাদ আহ্লাদ সব গুটিয়ে রাখি পরাজিত সৈনিকের মত।

আমি উড়ছি কারো ইচ্ছায়, বন্দি জীবনটা লেজ নড়ায়, এদিক ওদিক দোল খায়, সেই আমাকে দেখে মানুষ মজা পায়। কেউ কেউ তো আমার থেকে ভাল উড়া ঘুড়িগুলোকে আনন্দে লাটাই থেকে মুক্তি দেই। আমি এসব মুক্তি পাওয়া ঘুড়িগুলোর পরিণতি দেখেছি, দেখছি প্রতিনিয়ত।

যে ঘুড়ি গুলো উড়তে উড়তে কোথায় জানি নিঃশেষ হয়ে যায়। তাইতো ভয় হয়,,,,,হঠাৎ ঘুমটা ভেঙে গেল,চেয়ে দেখি চা নিয়ে রুপা দাঁড়িয়ে আছে।নিজের গায়ে নিজেই চিমটি কাটলাম সত্যিই তো রুপা।আজ বহুদিন পর রুপা ফিরে এসেছে ঐ নীল আকাশে ওড়া ঘুড়ির মতো,,, ভালবাসার মায়া নামক যে একটা লাটাই হৃদয়ে অবশিষ্ট  ছিল বলে….

কুলিয়ারচর, কিশোরগঞ্জ