এলো হেমন্তে নবান্নের দিন, ফিরে এলো অঘ্রাণ
ফেলে আসা স্মৃতিগুলো উঁকি দেয় বুঝি, পাই তার ঘ্রাণ
কুয়াশার চাদর বিছানো ভোর, মিষ্টি হিমেল হাওয়া
কমলা বিকেল, সোনা মাখা পাকা ধানে মাঠ ঘাট ছাওয়া
ঝুলি হাতে আলে আলে ঘুরতাম ধান কুড়ানোর দল
দাঁত দিয়ে কাটতাম ধানের গোছা – চুরিবিদ্যা সফল।
লিপি আপু ছিলো যেন দলটার অঘোষিত সরদার
শিষ্যরা প্রাণপণ মানতাম সুকঠিন নির্দেশ তার
ইঁদুরের গর্তে ভয়ার্ত ঢুকোতাম অনুসন্ধিৎসু হাত
মুঠি মুঠি ধান দিতো ধরা, যেন আশ্চর্য যাদুর দোয়াত
সেই ধান ফেরিওয়ালাদের দিয়ে কিনতাম নাড়ু
নারকেলি আইসক্রীম, তিলের মোয়া, নিমকির খেড়ু।
লিপি আপু কৌশলে কিনতো নিজের লাগি প্লাস্টিকি-বালা
লালরঙা লিপস্টিক, কাচের চুড়ি কিংবা গীলটির মালা
একবার সমস্ত সংরক্ষিত ধান বেঁচে দিয়ে শেষে
খেলেছিলাম চড়ুইভাতি পুকুরের উঁচু পাড়ে বসে
লিলি আর লিপি আপু নিলো ভার রান্নার সমস্ত ফর্দ
যোগালাম কাঠ-খড়ি, হাড়ি-পাতিল আমরা কয় মর্দ।
মাটির চুলার মাঝে ধরিয়ে আগুন শুরু হলো রান্না
ধেঁায়া আর পেঁয়াজের ঝাঁজে চোখ ফেটে এলো যেন কান্না
খাবার খাওয়ার বেলায় দেখি আহা… ভাত হলো জাউ
ডালে নুন বেশি, মাংসের তরকারী ঝালে হাউ-ফাউ
তবু হলো বেশ মজা, মজা করে বনভোজন আহার
ফেরারী সেই হেমন্ত, প্রাণোচ্ছ্বল দিন বুঝি ফিরবে না আর।
আপনার মন্তব্য লিখুন