সাদা মাটি আর সাদা মানুষের ভীড়ে
ইচ্ছেঘুড়ি উড়িয়ে এলাম সুসং দুর্গাপুরে।
আদিবাসী ঘেরা ছোট্ট শহর প্রাণের বিরিসিরি
তার পাশ দিয়ে বয়ে চলে গেছে মিষ্টি সোমেশ্বরী।
বিজয়পুরের সাদা মাটি আর সাদা মানুষের মন
তারই মাঝে ‘রাশিমনি’ নারী জাগরণের প্রাণ।
সমতল যেনো মানুষের শরীর, পাহাড়সম মন
মানুষের মাঝে নেই ভেদাভেদ মুসলিম-হাজং।
সোমেশ্বরীই মতই স্বচ্ছ, খোলা মানুষের দ্বার
তাদেরই এক সমাজসেবক ছিল ‘ওমর মাস্টার’।
জীবনটাভর মানুষের তরে কাটিয়ে বেড়ায় যারা
চিরজীবি হয়ে মানব হৃদয়ে ঠাঁইপায় বুঝি তারা।
গারো পাহাড়ের কোলঘেঁষা আদিবাসীদের ঘরে
প্রাণেরস্পন্দন হাসিমুখগুলো সদাঝলমল করে।
পাহাড়ি কন্যার রূপ ধরে সেই স্বচ্ছ ঝর্ণাধারা
অবিরামগতিতে বইছে দেখে আমরা আত্মহারা।
পাহাড় চূড়ায় টিলার উপরে সাংমাকে মনে পড়ে
ওরাই ভালো বাসতে জানে, হৃদয় উজার করে।
ঐতিহ্যে ভরা দুর্গাপুরের কিছু প্রাণের হাতিয়ার
হাজংমাতা ‘শহিদ রাশিমনি’, রক্ত বইছে যার!
গণ মানুষের নেতা তুমি ‘কমরেড মনি সিং’
শোষিতের জয়গান গেয়ে তুমি চির অমলিন।
নির্যাতিতের সকলের প্রিয় তুমিই আলোর গান
দেশব্যাপী তাই ঝলমলে, তোমার পতাকার মান।
মেঘালয়ের জলকন্যা সেই সোমেশ্বরীর তীরে
টঙক যুদ্ধে ‘মনি সিং’ লড়ে সাদা ঘোড়ায় চড়ে।
তীর-ধনুক আর জীবন নিয়ে ঝাপিয়ে পড়ে সবে
টঙক যুদ্ধে বিজয়ী হয়েই ঘরে ফিরবে তবে।
লড়াইকালে মনিবাহিনীর ভয়ে কাঁপে সেই রাজা
কৃষকের কাছে পরাজয়ে উঠে যায় ‘টঙকপ্রথা’।
মুক্তিযুদ্ধের উপদেষ্টা ছিলে ‘কমরেড মনি সিং’
বাংলা ভূমি ভুলিবেনা কভু তোমার ত্যাগের ঋণ।
চির বিপ্লবী শোষিতের হয়ে জীবন করেছো পার
তোমার জন্মে ধন্য বাংলা, সালাম অবিরাম।
তুমি ছিলে সকল ত্যাগে, ‘কমরেড মনি সিং’
শোষিত মানুষ জানে তোমায় ‘বিপ্লবের প্রতীক’।
আপনার মন্তব্য লিখুন