“আমি অনন্যা” প্রকাশিত হয়ে আসছে ভারতের ঝাড়খন্ড প্রদেশের ধানবাদ থেকে । দেশ-বিদেশের দুইশত সতের জন কবির কবিতা নিয়ে প্রকাশিত হয়েছে গবেষণামূলক পত্রিকা ” আমি অনন্যার ” বিশেষ কবিতা সঙ্কলন ” বেড়া ভেঙ্গে “। “আমি অনন্যা” একটি শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতি-ইতিহাস ও বিজ্ঞান বিষয়ক ত্রৈমাসিক গবেষণামূলক পত্রিকা । পত্রিকাটির নান্দনিক প্রচ্ছদ, বিষয়ভিত্তিক লেখার অলঙ্করণ সত্যিই অতুলনীয় ও প্রশংসাযোগ্য । প্রধান সম্পাদক ড. দীপক কুমার সেন । উপদেষ্টা মন্ডলীতে রয়েছেন- ড. দিগম্বর দাশগুপ্ত ও ড. শুভলক্ষ্মী ঘোষ (বসু)। সম্পাদকীয় পর্ষদে রয়েছেন- ড. বাদল ঘোষ, ড. সুদীপা দত্ত, ড. গৌতম মু্র্খাজী, ড. শর্মিলা ব্যানার্জী, ড. জয়গোপাল মন্ডল, ড. কৌশিক দাসগুপ্ত, সুকুমার মোহান্ত, তপন রায়, ড. সুদীপা দত্ত, রুমকি আনোয়ার ও অরূপ কুমার মাইতি প্রমুখ সুশিক্ষায় শিক্ষিত স্বনামধন্য বিশিষ্টজন । ডিজাইনিং ও মুদ্রণ তদারকিতে রয়েছেন অজিত রায় ও প্রচ্ছদ বিন্যাসে বিনয় রায়। সহযোগী সদস্য হিসেবে রয়েছেন- অরূপ সিনহা, অভিজিৎ চ্যাটার্জী, অর্ণব গড়াই, মনোজ মজুমদার ও সুমিতা দাস প্রমুখ।
পত্রিকাটির জন্ম ও পরিচালনা কয়লার রাজধানী ধানবাদের বুকে হলেও আমি অনন্যা দেশের বাইরে অন্যান্য দেশে বাংলা ভাষাপ্রেমি লেখক পাঠক-পাঠিকাদের কাছে জায়গা করে নিতে সক্ষম হয়েছে আর প্রশংসিত হয়ে আসছে বিষয়বৈভবে ভরপুর ভিন্নস্বাদের গবেষণাধর্মী লেখার কারণে । নানান বাধা- বিপত্তির মধ্যেও “আমি অনন্যা” যে অবিচল থাকতে পেরেছে তা শুধু পাঠক- পাঠিকা, লেখক- লেখিকা আর শুভানুধ্যায়ীদের প্রেরণায়। “অামি অনন্যা”য় সাহিত্য বিষয়ক লেখার পাশাপাশি সমাজ বিজ্ঞান, পরিবেশ বিজ্ঞান, উদ্ভিদ বিজ্ঞান, গণিত, চিকিৎসা শাস্ত্রের উপর নানা ধরণের প্রবন্ধ নিয়মিতভাবে প্রকাশিত হয়ে অাসছে ।প্রধান সম্পাদক ড. দীপক কুমার সেন এর ভাষায়- “বাংলা ভাষা, সাহিত্য ও সংস্কৃতিকে টিকিয়ে রাখার কল্পে স্বল্প পরিসরে হলেও আজ প্রায় দীর্ঘ চল্লিশ বছর ধরে আমাদের সীমিত চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি । আর সাহিত্যকে কখনই অাঞ্চলিকতার সীমায় বেঁধে রাখা যায় না। কারণ এইরকম প্রয়াস সাহিত্যের অপমৃত্যু ঘটিয়েছে। আসলে কথা স্থান নয়- লেখা । লেখা যদি ভালো হয়, তা যেখান থেকেই আসুক না কেন- তা সাদরে “আমি অনন্যায় গ্রহণ করা হয়। এতে সহজেই অনুমেয় আমি অনন্যা একজন লেখক ও পাঠককে অতি সহজেই আপন করতে জানে নির্দ্বিধায়” । পত্রিকাটির যাত্রা শুরু হয়েছিল ১৯৭৭ সালে একটি পারিবারিক পত্রিকা হিসাবে ।
Indian School Of Mines, ধানবাদ এর তৃতীয় হোস্টেল এর ছয় নম্বর কক্ষে ড. দীপক কুমার সেন অত্যুৎসাহী বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের কয়েকজন কর্মকর্তা ও কয়েকজন জুনিয়র রিসার্স ফেলো মিলে পত্রিকাটির প্রকাশ শুরু করেছিলেন । পরবর্তীতে ২০১২ সালের “অক্টোবর- ডিসেম্বর” সংখ্যা থেকে ” আমি অনন্যা ” নামকরণ করে শুরু হয় পত্রিকাটির নবযাত্রা। তারপর পত্রিকাটি International Standard Serial Number ( ISSN) 2394-4307 পায় সাহিত্য-সংস্কৃতি-শিল্প ও বিজ্ঞান বিষয়ক গবেষণামূলক পত্রিকা হিসাবে । প্রধান সম্পাদক ড. দীপক কুমার সেন বলেন- শুরু থেকে “অামি অনন্যা”র এই সুদীর্ঘ যাত্রাপথ মোটেও কুসুমাস্তীর্ণ ছিলনা । বিভিন্ন সময়ে নানা ধরনের প্রতিবন্ধকতার কারণে ধানবাদের মতো রুক্ষ- শুষ্ক ধরিত্রীর বুকে প্রাণরস সংগ্রহ করে পত্রিকাটিকে টিকিয়ে রাখা খুবই কষ্টকর হয়ে দাড়িয়েছিল। সেই অসমতল প্রতিবন্ধকতার খাড়াই-উৎরাই পেরিয়ে “আমি অনন্যা” আজ অনন্য আলোকিত ও প্রতিষ্ঠিত একটি ত্রৈমাসিক গবেষণামূলক পত্রিকা এবং যত দ্রুত সম্ভব পত্রিকাটি দ্বিমাসিক হচ্ছে। এ পত্রিকাটি শুধু বেঁচেই থাকেনি, কঠোর যাত্রাপথ অতিক্রম করে একটি পুরোমাত্রার গবেষণামূলক পত্রিকা হিসাবে আজ নিজেকে প্রতিষ্ঠা করেছে। “আমি অনন্যা” বিজ্ঞান ও সাহিত্যপ্রেমি পাঠক ও লেখকের গবেষণামূলক পত্রিকা হিসেবে দিনের পর দিন সমাদৃত ও অাদৃত হয়ে আসছে । পত্রিকাটির প্রতিটি প্রচ্ছদে রয়েছে শিল্পের নান্দনিক ছোঁয়া। আমি অনন্যার পত্রিকাটির ইমেইল [email protected] এবং ওয়েবসাইট www.aamiananya.com ।
অসংখ্য লেখক পাঠক ও শুভানুধ্যায়ীদের অক্লান্ত চেষ্টা, শ্রম ও ভালোবাসায় নন্দিত হোক অামি অনন্যার আগামীর পথচলা। জীবনে চলার পথে নানা বাধা-বিপত্তি, খারাই-উৎরাই, ঘাত-প্রতিঘাত, সংকট-সংঘাত, প্রতিবন্ধকতা ও জটিলতা থাকবে। সেখানে একটি পত্রিকাকে দীর্ঘ চলার পথে অসমতল, বন্ধুর ও কন্টকাকীর্ণ পথ পাড়ি দিয়ে প্রতিকূলতাকে জয় করে নিজেকে টিকিয়ে রাখার দৃঢ় প্রত্যয়ে নিরলসভাবে একাগ্রতা ও আত্মপ্রত্যয়ে কাজ করে যেতে হয়। বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম এর কবিতার কয়েকটি চরণের কথা এক্ষেত্রে প্রণিধানযোগ্য – “দুর্গম গিরি, কান্তার মরু, দুস্তর পারাবার / লঙ্ঘিতে হবে রাত্রি-নিশীথে, যাত্রীরা হুঁশিয়ার / দুলিতেছে তরী, ফুলিতেছে জল, ভুলিতেছে মাঝি পথ / ছিঁড়িয়াছে পাল, কে ধরিবে হাল, আছে কার হিম্মৎ ? / কে আছে জোয়ান হও আগুয়ান, হাঁকিছে ভবিষ্যৎ / এ তুফান ভারী, দিতে হবে পাড়ি, নিতে হবে তরী পার”…। শুভকামনা নিরন্তুর । নবসাজে- নব আনন্দে ও নব উদ্যমতায় ‘আমি অনন্যা’ এগিয়ে যাক নিঃসঙ্কোচচিত্তে। জয়তু ‘আমি অনন্যা’।
আপনার মন্তব্য লিখুন