রঙের জীবন

বসন্ত এসে গেছে……

মাহবুব হাসান:
থাক তব ভুবনের ধুলিমাখা চরণে,

মথা নত করে রব, বসন্ত এসে গেছে

বসন্ত এসে গেছে…. কি মনে হচ্ছে একটু কি বদলে গেল প্রকৃতি? রাজপথের পাশে ফুটে থাকা পলাশ-শিমুল-কৃষ্ণচূড়া কি জানান দিচ্ছে বসন্তের আগমন? কচি সবুজ পাতা, লাল-হলুদ ফুল প্রকৃতিকে তো রাঙিয়ে দিয়েছে বসন্তের রঙে। বেশবাসেও কি তার ছোঁয়া লাগবে না? সামনেই পয়লা ফাল্গুন। বসন্তকে বরণ করতে বেরিয়ে পড়বে সবাই। বাসন্তী রং শাড়ি পরে ললনারা ডাক দেবে মেলায় যাওয়ার। আর তার জন্য নিজেকে তৈরি করতে হবে সবার আগে।

পহেলা ফাল্গুনের আর মাত্র কিছু দিন বাকি। তো সেদিনের সাজটা কেমন হবে আপনার? বসন্তের প্রকৃতিতে রঙের ছড়াছড়ি। পয়লা ফাল্গুনের সাজে তাই রঙের ছোঁয়া থাকবেই। নতুন ফুল, পাতার রংগুলো তুলে আনুন পোশাকে। শাড়ি, সালোয়ার-কামিজ, ফতুয়া যা-ই পরা হোক, তাতে তো বসন্তের উজ্জ্বল রংগুলোর ছোঁয়া থাকা চাই। আর বসন্তের ফুলগুলো তো থাকবেই চুলে, গলায় বা হাতে।

বেইজ মেকআপ :

প্রথমত রোদের জন্য মুখে সানস্ক্রিন লোশন লাগিয়ে ৫-৮ মিনিট অপেক্ষা করুন। সানস্ক্রিন শুকিয়ে এলে আবার বেইজ মেকআপ শুরু করা যাবে। দিনের বেলায় ফাউন্ডেশনকে না বলাটাই ভালো। তাই বেইজ মেকআপের জন্য বিবি ক্রিম বা টিন্টেড ময়েশ্চারাইজার লাগান। কন্সিলার দিয়ে মুখের ছোটখাটো দাগগুলো ঢেকে দিতে পারেন। ফাইনাল ফিনিশিং দিতে লুজ পাউডার বা ফেইস পাউডার বুলিয়ে নিন। যখন আপনি বুঝবেন আপনার ত্বক শুষ্ক হয়ে গেছে, তাহলে আপনার বেইজ মেকআপ তৈরি হয়ে গেল। এরপর ইচ্ছে হলে হালকা পিচ বা গোলাপি রঙের ব্লাশন লাগাতে পারেন।

চোখের সাজ :

চোখের সাজের জন্য ব্যবহার করুন উজ্জ্বল রংগুলো যেমন ব্রাউন, গোল্ডেন, কপার, সোনালি বাদামি, লালচে সোনালি ইত্যাদি রঙের আইশ্যাডো। এরপর চোখে মোটা করে কাজল লাগান এবং চোখের পাপড়িতে মাশকারা লাগান এক কোট। ব্যাস, হয়ে গেল চোখের সাজ।

চুলের সাজ :

আপনি যদি চুল খোলা রাখতে পছন্দ করেন তাহলে ব্লো ডাই, আয়রন বা স্পাইরাল রোল করে চুল ছেড়ে রাখতে পারেন। চুলের এক পাশে ক্লিপ দিয়ে তাজা ফুল গুঁজে দিতে যেন না ভুলে যান। সামনে দুই পাশ থেকে চুল টুইস্ট করে টেনে পেছনে নিয়ে ক্লিপ দিয়ে আটকে নিতে পারেন।

শাড়ি পরলে শাড়ির সাথে চুলে খোঁপা বা বেণি করলে বেশি ভালো লাগে। গাঁদা বা বেলি ফুলের মালা দিয়ে জড়িয়ে নিন আপনার বেণীটি। আবার ছোট ছোট ফুল বসিয়ে দিতে পারেন পুরো বেণীতে। খোঁপা করলে খোঁপার একপাশে দিতে পারেন বড় একটি ফুল যেমন জারবেরা বা গোলাপ ইত্যাদি। আবার ফুলের মালা দিয়েও জড়িয়ে নিতে পারেন আপনার খোঁপাটি।

ফুলের সাজ :

ফুলের সাজ বলতে, অনেকে গয়না হিসাবে ফুলকে বেছে নেয়। সেক্ষেত্রে কানের দুল, গলায় মালা, মাথায় প্রিন্সেস ব্যান্ড বা চুলের সাজে ফুল কিংবা হাতে মালা পেঁচিয়ে নেয়া যায়। তবে প্রাধান্য পাবে গাঁদাফুল, বেলি, গন্ধরাজ, গোলাপ, জারবেরা ইত্যাদি। বাসন্তী রঙের কারণে পহেলা ফাল্গুন গাঁদা ফুলের সাজকে সবাই বেশি পছন্দ করে।

গয়না :

যেহেতু সাজ পোশাক সম্পূর্ণই হালকা তাই গয়নাটা ও হালকা মানের দেশীয় গহনা গুলো বেছে নিন। সালোয়ার-কামিজ, ফতুয়া, পাঞ্জাবীর সাথে মাটি, কাঠ কিংবা মেটালের দুল পরুন। গলায় কিছু না পরাটাই ভালো। হাত ভর্তি চুড়ি পরুন। হাতের জন্য বেছে নিন কাঠ, মাটি, মেটাল বা কাঁচের রেশমি চুড়ি। শাড়ি পরলে গলায় পরতে পারেন লম্বা পুঁতির মালা। হাত ভর্তি পরুন কাঁচের রেশমি চুড়ি।

সবশেষে, কপালে পরুন বড় একটি লাল টিপ বা কুমকুম দিয়ে ডিজাইন করে টিপ এঁকে নিতে পারেন। আপনার সাজে স্নিগ্ধতা আনতে ঠোঁটের জন্য বাছাই করুন হালকা রঙের লিপস্টিক। সাজে সজীবতা ধরে রাখতে ব্যবহার করুন হালকা সুগন্ধি।