কবিতা

স্থির জলের ন্যায় জীবন || শামসুদ্দিন হীরা

স্থির জলের ন্যায় জীবন

-শামসুদ্দিন হীরা

শরতের কাঁশ রেণু উড়ে হেমন্তবাড়ি পানে।
শালুক, অবলুপ্ত ঢাউস শাপলা, মেঘেদের ফিকে হয়ে ভাসা। নেমে যাওয়া বর্ষাজল,
শুষ্ক বনপথ
মেঘহীন গোধূলী জলের আয়নায় কার রূপ দেখি?
নিঃতরঙ্গ জলে গাছেরা ছায়া ফেলে চিত্রকর হয়ে।
নীহারিকা জোছনা
তারা’দের ছুটে চলা দেখি
বেত হোগলায় কচি ডাল বেয়ে, আমনের সোনালু রঙ দেখে
ঋতু বলে দেবে
জ্যোতিষ কৃষাণি।
আঙ্গিনায় বসে,
হিজলের ফাঁকে
মাঠ দিগন্তে
প্রকৃতি মেতেছে
শিল্পিত সাঁজে।
কতো ঋতু চলে যায়
বেখেয়ালি আমি,
সংসারী দৃষ্টির ধূসরতায়। ভাতের প্রয়োজন,
মুখেরও বিবর বিরাট
লালাহীন নিঃশ্বাস রহিত।
কী ভাবে,
আকাশ দেখি?
মাসচক্রের পরিক্রমায়, মাহিনা পাওয়ায়।
গাঁও দেখা হয় না-
চালতা ফুল,
লাউয়ের ডোগা
সাঝনার ঝিরিপাতা।
খলশে পুঁটি
মায়ের বিস্মিত মুখ।
ইচ্ছের পালে হাওয়া নেই যেখানে সেখানে যাওয়া নেই ধ্যানমগ্ন সারসের ন্যায় নির্লিপ্তি যাপন।
হায় বিবশ সময়!
স্থির জলের মতো প্রতিবিম্ব ধারণ শেষে
নীড় ভেঙে টেনে নেয়
অসীম সাগরে।