জীবনের গল্প রঙের জীবন

বাদামওয়ালা-৪

মনে বল দেহে নেই, নেই কেন? তবু আছে মুক্তি
নিজেকে নিজে ভাঙি, তবু করি নিজ গুণে ভক্তি…

::
সময়মত মেস বিল পরিশোধ করতে পারছিনা। তাই অগ্যতা মেস ছেড়ে দিয়ে নিজেই রান্না করে খাব বলে সিদ্ধান্ত নিলাম, যদিও একটি বার ও ভাবলাম না রান্না করতে পারব কিনা। এক রকম মনের জোরেই হুট করেই এমন টি করা। পরিস্থিতি আমাকে এই সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্যই করিয়েছে বটে।
::
কয়েক দিনেই ফারুক, সাইফুল দের সাথে কেমন একটা বন্ধুত্ব হয়ে গেলো। আমার মতই ছন্নছাড়া পথভ্রান্ত পথিক, বাস্তবতা কেমন আমাদের এক কাতারে এনে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। যদিও এরা বেশ উঠতি পরিবারেরই ছেলে। বাবার বহু টাকা নষ্ট করে পরিবার থেকে এক রকম বিতাড়িত ই হয়েছে বলা যায়।

আমার মতই ওরা স্বপ্নবিলাসী তরুণ, নিজেই কিছু করতে চায়, ইচ্ছা ওদের কঠিন, স্বপ্ন আকাশ ছোঁয়া হৃদয়ের গভীরতা বিশাল। এ তারুণ্য এগিয়ে যেতে চায় বহুদূর; বার বার ফিরে আসি জাগতিকে দূর আকাশে ক্ষীণ আলো টিমটিম করে জ্বলে ও তীরে মেঘ জমেছে বৃষ্টি নামবে বুঝি এ অশান্ত ধরায়। নামুক আজ ভেসে নিয়ে যাক ধূয়ে মুছে শান্ত হোক তবু এ পোড়া চোখ।
::
আজ তিন দিন ধরে উপোস, পকেটে ১৩ টাকার ব্যবচ্ছেদ। গত কয়েক দিন পানি আর কয়েকটি চিঁড়ে চিবিয়ে চলে গেছে। ছোট থেকে উপোষ থাকার অভ্যাসটা ছিল টানা তিন দিনের অভ্যেস নেই তাই আর কুলিয়ে উঠতে পারছিলাম না। শরীরে বল পাইনা উঠতে গেলে উঠতে পারিনা কেমন পড়ে যাই তবু উঠে দাঁড়ার চেষ্টা করি।

মনের জোরে উঠে দাঁড়াই শরীরের জোরে নয়। পিপাসায় বুক ফেটে যায় ক্লান্ত দেহে টেনে নেই নেই প্লাস্টিকের বোতল, আমি কাক হয়ে যাই ক্ষণিকের তরে। নিজের মানবতা নিজেকে মানবতাহীন করে দেয়। এ মানবতা রোজ কাক হয়ে উড়ে যায় শহর পল্লীতে আমার ঠিকানা জানা নেই।

শীর্ণকায় দেহ নিয়েই উঠে পড়ি, রাস্তা হাটি এলোমেলো পায়ের গতি শ্লোথ হয়ে আসে। হোটেলের খাবারের গন্ধ নাকে লাগে, অবাধ্য এ মন বাঁধা মানে না তবু ছুঁটে যেতে চায় ক্ষুধার্ত মানবের চোখ। তবু পথ আকঁড়ে পড়ে থাকি শেষ সম্বল টুকু থাক। কি নিরুপায় আমি? কি অপাংক্তেয় আমার ভবিষ্যৎ।

#নিচু তলার উকিল