রঙের জীবন

দেহ স্পর্শে নয় হৃদয় স্পর্শে প্রেম হয়-১ম পর্ব || ইকরাম মাহমুদ

আমার শেষ কথা..!
তুই আমার পছন্দ করা ছেলে কে বিয়ে করতে ই হবে বলে দিলাম।

বাবা আমার একটা কথা শুনেন.! সামনে আমার দ্বাদশ শ্রেণীর পরিক্ষা, আমি এখন মন দিয়ে পড়াশোনা করতে চাই,বিবাহ করতে প্রস্তুত নয় বাবা,

সোনালীর বাবা কথা শুনেন নি,শোনবে ই বা কেন! পূর্বে বলে দিয়েছেন তার শেষ কথা,কিছু পুরুষের এক কথা খুব ভয়ঙ্কর হয়,সোনালীর বাবা চলে গেলেন রাগান্বিত মনোভাবে,

এদিকে
সোনালীর মন খুব খারাপ,অশ্রুকণা টপটপ করে ঝরে পড়ে জমিনে,কি চাই সোনালী কেউ জানতে চাই না, মন পাখিটা ছটফট করে কিছু বলতে চাই,কে শুনবে পাখির মনের কথা,!

হয়তো কেউ না, মা জননী আপনজন আছেন তিনি মুখ বুজে সব সহ্য করেন,উনি সোনালীর বাবার ভয়ে চুপ থাকে গৃহতলে প্রতিনিয়ত আর কান্নাকাটি করেন।

এটাই কি মানব জীবন.!
হয়তো না,এর শেষ অবশিষ্ট কিছু আছে,

তখন-বর্ষাকাল
চারদিকে বৃষ্টি ভেজা দূর্বাঘাসে ভরপুর,পাখিদের আপন মনের সুর,নদীনালা, খালবিল,দীঘিনালা,পুকু­র,বৃষ্টির পানিতে থৈথৈ,স্বচ্ছজল আর নোংরা জল মিশে একাকার, নৌকা চলে পাল সহ, মাঝির মন পূবালী বাতাসের সাথে মিশে ভাটিয়ালী মৃদুকণ্ঠের গান,গাঙচিল গুলো উড়ে উড়ে বলে মাছ তুমি হয়ে যাও পানিতে ভাসমান,
এভাবে কিছুদিন অতিবাহিত হয়,নিয়ম অনিয়মের মায়াজালে।

হঠাৎ একদিন.
রাঙা প্রভাতে “সোনালী” পাশের পুকুর থেকে গোসল করে বাড়ি ফিরে,দৃষ্টিভঙ্গি প্রকৃতি ঘিরে, আহা আজ আকাশের বুকে সূর্যের উঁকিঝুঁকি,চিকচিক করে সাদা বালি,মৃদু-বাতাস বয়ে চলে পুকুরে পানির ঢেউ, গাছের পাতা নড়েচড়ে, সোনালী প্রতিনিয়ত প্রকৃতির প্রেমে পড়ে,সে কেন ই বা প্রেমে পড়বেনা-! অধিকাংশ মেয়ে প্রকৃতি প্রেমিক।

সোনালী
মনমরা ভাব দূর করে বাড়ি এসে শুনে,
কি এমন কথা শুনেছে সোনালীর মন অচিরে খারাপ হয়ে গেলো!

মা জননী ডাক দিয়ে বলে,কিরে মা সোনালী একটু সেজে নে নতুন ইস্ত্রি করা জামা টা পড়ে নে,আজ পাত্রপক্ষ আসবে বহুদূর থেকে তোকে দেখতে,
সোনালী চুপচাপ, ঠিক তখন বুঝা যায় অনুভূতির কাছে মনের ঝড় দ্বিগুণ তুফান বয়ে যাচ্ছিলো,
মা জননী
আরো বলেন,যদি উভয় পক্ষের পছন্দ হয় তবে বিবাহ নাকি ঠিকঠাক হয়ে যাবে তোর বাবা বলেছেন।

এমনিতে রূপবতী সোনালী,
তারপর আজ মায়ের কথামত সেজে নিলো,আয়নার সামনে দাঁড়ানো রূপবতী সোনালী,ঘনকাল মেঘবরণ কেশ ভেজা তবু সুঘ্রাণ বিমোহিত করে , এলোকেশে সোনালী বেশ রূপবতী,কপালে কালো টিপ,ঠোঁটে গোলাপী রঙের লিপ-স্টিক,ভ্রমরকালো ডাগরআঁখিতে আলতো কাজলে অনেকটা পরী পরী ভাব,গোলাকার মুখমণ্ডল,সুঁনাইমুখী সুঁই এর মত পাগল করা নাক, সব মিলিয়ে সোনালী যেন রাজকুমারী।

পরিবারে কিছুটা আনন্দ মুখরিত হৈচৈ পরিবেশ ,এই বুঝি পাত্রপক্ষ এসে পড়েছেন, মেহমান হয়ে যার যার আসন গ্রহণ।

গ্রামের পরিবেশে পাত্রপক্ষ কে যাথার্থ্য সমাদর করেন সোনালীর পরিবার,কথোপকথনের এক পর্যায়ে কন্যা দেখার প্রস্তাব পোষণ করেন পাত্রপক্ষ,
সোনালীর বাবা ডাক দিয়ে বলেন,আমার সোনালী মা কে তোমরা কেউ একজন নিয়ে আসো তো,রূপবতী গুনে গুনে পা দিয়ে এসে হাজির,
ঠিক সেই মুহূর্তকালে বর রূপবতীর রূপ কিঞ্চিৎ দেখে তৃষ্ণার্ত হয়ে গেলেন।

_____________চলবে..