কবিতা

হৃদ্সংক্রান্তি

চাণক্য বাড়ৈ

আমার হৃৎপি- ঠোঁটে করে উড়ে যাচ্ছে যে পাখি, তার জন্য এই উলুধ্বনিময় সন্ধ্যা। ভাবছি, কে হবে আজ এই হৃদ্সংক্রান্তির যোগ্য পুরোহিত। ও পাখি বলো, কোন পুরাণে তোমার বসবাস? আর কোন সর্গে তোমার স্নানদৃশ্যের ললিত শোলোক? আমি ফেটে-পড়া ডালিমের বিচ্যুত দানার মতো এই জীবন পুরোটা বন্ধক রেখে তোমাকে একফোঁটা পবিত্র জল এনে দেব।

 

পাতা আছে মঙ্গলঘট; এখনই বেজে উঠবে করুণ পাঞ্চজন্য। আতপ হলুদ আর শিলনোড়া নিয়ে ওই তো বসে গেছে গ্রাম্য বধূরা। বাটা হবে হরীতকী নিম সুগন্ধি চন্দন। এই মাহেন্দ্র-মুহূর্তে দূর্বা আর তিল-তুলসীভরা বরণ-কূলা নিয়ে কীভাবে দাঁড়াই- আমি তো সেই অবিমৃশ্যকারী, যে এক নিষিদ্ধ নদীর আহ্বান উপেক্ষা করতে না পেরে বেছে নিয়েছে অন্ত্যজ- অচ্ছুত জীবন…

 

তবু- হে সন্দিগ্ধ খেচর, সময়ের আঘাতে বিচূর্ণ খন্ড খন্ড আয়নায় তোমার ভবিতব্য দেখে আমি স্পষ্ট বলে দিতে পারি- আকাশের প্রশস্তি গেয়ে গেয়ে তুমি এক তপস্বিনীকে খুঁজে নেবে, যে তার বুকে ঝুলিয়ে রেখেছে একটি বিবর্ণ খাঁচা- তোমার আগমনে এক প্রান্তিক পূজারির নগণ্য নৈবেদ্য।

আপনার মন্তব্য লিখুন

Click here to post a comment