রঙের জীবন

ক্ষুধার্ত জীবন || ইকরাম মাহমুদ

শীতলক্ষা নদীর তীরে ছোট্ট একটি গ্রাম,আয়তনে ক্ষুদ্র বসতবাড়ি সল্প তবে ভালোবাসার মাঝে চলে ছোট বড় কে করে সম্মান।
পূর্ণিমারাতে সবাই একসাথে মগ্ন হয় আড্ডাবাজি আর ফেলে আসা স্মৃতিময় গানে,পাখির সুরে কাকতালীয় ভাবে মিলন হয় মনের অগোচরের কথাকলি,নিদ্রা জাগ্রত মৃদুহাসি কত শত,নব-তৃণমূলে বসে নিশ্চিতরূপে প্রজাপতির গুঞ্জন,ভ্রমরের মায়ার স্পৃহা সাধিত নবাগত কুসম ও ভালোবাসা বিস্তার অবিরাম। 

দু-মুঠো খাবারের জন্য কত নানান সাধনা বাসনাকুলে মগ্ন হয়ে করে পরীর মা জননী প্রার্থনা।

তারপর একটি সূচনা উদ্ভাসিত..!!

(পরী) আয় মা ভাত খাবি,মায়ের ডাকে সারা দিতে চায়না পরী তবু ক্ষুধার্ত পেটের যন্ত্রণা সবাই তো বুঝবে না,
মা এর থালা নেই পরীর জন্য মা ভাত রেডি করে ডাকেন, মা কত বড় আপন জন নিজে না খেয়ে পরী কে খেতে দিলো,পরী বুঝে নিলো মা হয়তো খাইনি খাবে কি করে পরিবারে তো খারার সংগ্রহ করার কেউ নেই বর্তমানে।

পরী..!!
নামে যেমন রূপেরমোহ ঠিক তেমন,নিশুতির মেঘমালা চাঁদকে যদি ঢেকে ফেলে তবে পরীর সৌন্দর্যরূপ ভাঙা ঘর দীপ্তময়ী করে তুলে,ভ্রমর কালো কেশ,ডাগরআঁখি দেখার মাঝে মুগ্ধ পৃথিবী, হাসির ঝলকে মুক্ত ঝরে, কন্ঠের জাদুতে রূপকথা রাণী মন বলে,
এমন রমণী সত্যি পরী নামে স্বার্থকতা।

নামটি তার বাবা রেখেছিলেন,অথচ ভাগ্যের লিখন জন্মের দুবছর যেতে না যেতে বাবার অকাল মৃত্যু ঘটে,ভূবনে মা আর ভাই ছাড়া কেউ নেই পরীর,হতভাগী এভাবে ই ভাই এর আদর মায়ের ভালোবাসা তে বড় হয় দিনদিন।
পড়াশোনা তে ছিলো বেশ ভালো ছাত্রী, টাকার অভাবে পড়াশোনা পরিশেষে হয়তো বন্ধ ঘোষণা করে দিবে পরিবার,

বড় ভাই নিরীহ মানুষ রোজগার সহজ ভাবে করতে পারেনা, পরী তো নারী জাতি কতকিছুর দরকার হয় তবু বলার মত মনোভাব সৃষ্টি হয়না,একদিন রাতে খাবার পেলে পরদিন সকালে দুপুরে অনাহার থাকা লাগে, মাঝে মাঝে মুড়ি পানি খেয়ে আহার নিবারণ করে পরী ও তার পরিববার,এক লুকমা ভাতের মূল্য কত তা পরী জানে, 
নারীত্ব বজায় রাখে নরপশুদের ছোবল থেকে নিজেকে রক্ষা করে, কেউ টাকার প্রলোভন দেখাই কেউ বা প্রেমের ফাঁদে ফেলতে চাই রূপবতী পরী কে, কেবল দেহ-তৃপ্তির লক্ষে, পরীর জীবন ভয় আর ক্ষুধাযুক্ত মৃত্তিকা তে বালিশ চাপা অশ্রুজলে নিদ্রা যায়।

কতটা সহ্যগুণ ছিলো পরীর মাঝে সেটা বলে বুঝানো অসম্ভব, দারিদ্রসীমা অতিক্রম হয়ে গেলে ও সহ্যকরণ কঠিন শিক্ষার হাতছানি দিয়ে যায় প্রতিনিয়ত।

খাঁটি রমণীর স্লোগান …!!
তবু ভিক্ষা দেহ বিলীন নয় অক্লান্ত পরিশ্রমের মাধ্যমে আহার নিবারণ করার তীব্র সৎ মনোভাব সৃষ্টি করে চলে ক্ষুধার্ত পরী আর তার পরিবার।

অতঃপর——–
অনাকাঙ্ক্ষিত বাস্তবিক ভুবনে আলোর প্রদীপ হারা,গৌরবময় সাধন ভোজন হবে কি সৎ কৃতিত্ব ছাড়া..??