অণুগল্প সাহিত‌্য

এক চিলতে সুখ || নির্ঝর মাহমুদ খান

আজ শহর টা একদম নির্জন,
রাস্তায় তেমন গাড়ি চলাচল নেই। কেবল রোড ল্যাম্পের বাতি জ্বলছে। সপ্তাহের শেষ দিন আজ তাই অফিসের সব কাজ শেষ করে বাসায় ফিরতে দেরি হয়ে যাচ্ছে।

রাস্তায় নেমে দেখি কোন গাড়ি নেই, অনেকক্ষন দাড়িয়ে থাকার পর ফুটপাথ দিয়ে হাটা শুরু করলাম। এমন সময় আমার পিছন ধরে ১০_১২ বছরে এক মেয়ে ও হাটতে শুরু করল। আমি জোরে হাটছি সেও আমার পিছনে জোরে হাটছে।

খুব ভয় পেতে শুরু করলাম। কারণ শহরে অনেক ধরনের চক্র আছে যারা বিভিন্ন ভাবে হয়রানি করে ছিনতাই করে । আর রাত বেশি হলে অবাধে অসামাজিক কাজকর্মে লিপ্ত হয়।

তো সাহস হচ্ছে না ,পিছনে ফিরে কিছু জিজ্ঞেস করবো ।ততক্ষণে মেয়ে টি আমার সামনে দাঁড়িয়ে আছে।
-ভাই ফুল কিনবেন.??
(হাফ ছেড়ে বাঁচলাম )
-এতো রাতে আমি ফুল দিয়ে কি করব।
-ভাই কিনেন না?? আজ হারা দিন গেলো একটা ফুল ও বেচতে হারি নাই।
-আমি বাসায় যাচ্ছি , ফুল কিনে কি করব..? বলে হাটতে শুরু করি।
-নিয়ে যান না বাসায় আফায় দেখলে খুশিই হইব। (বলে পায়ে পড়ে গেল)
-আচ্ছা
টিক আছে দাও.। (আমি)
সব গুলো নিয়ে ৫০ টাকা দেন।
ভাংতি নাই ১০০ টাকা নিয়ে যাও।
-তাইলে আমারে দু কেজি চাউল কিনে দেন।
কি বিপদে না পড়লাম।
আশে পাশে কোন দোকান নেই।
অনেক সময় ধরে হাটার পর একটা দোকান পেলাম।
চাল কিনে দিয়ে বাসার উদ্দেশ্যে রওনা হলাম।
পিছন থেকে মেয়ে টি আবার ডাক তে শুরু করল।
-ভাইয়া ঔ যে আমাদের বাসা।
চলেন না চলেন..।
ভাবলাম এসেই যখন পড়েছি তখন দেখেই যাই।
অতঃপর
বাসায় গিয়ে দেখি ..
মেয়েকে দেখে প্রতিবন্ধী মা বাবা জড়িয়ে ধরে বলছে কিছু এনেছিস.।
আজ ফুল বিক্রি করতে পারি নাই।
এই ভাই আমাকে চাউল কিনে দিয়েছে।
এই খানে আসেন।
আইজকা না খেয়ে যাইবেন না।
কিছুক্ষণের জন্য আমি যেন কোথায় হারিয়ে গিয়েছিলাম।