সম্প্রতি কিশোর-কিশোরী, বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী ছাত্র~ছাত্রী, বয়স্ক ব্যক্তি অর্থাৎ সব শ্রেনীর মানুষের মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতা বেড়ে গেছে। ব্যর্থতায় কিংবা হতাশায় যেমন কিশোর/কিশোরী ও মেধাবী যুবক আত্মহত্যা করছে, তেমনি বিভিন্ন কারণে বয়স্ক ব্যক্তি বা সমাজে প্রতিষ্ঠিত ব্যক্তিগণও আত্মহত্যা করছে!! কিন্তু বয়স্ক ব্যক্তি কিংবা সমাজে প্রতিষ্ঠিত ব্যক্তি কিংবা শুধুমাত্র ২০২১ সালে ১০১ জন বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী ছাত্রের আত্মহত্যা আমাদেরকে ভাবায়।
তাহলে আত্মহত্যার পেছনের কারণ কি? একাকীত্বতা নাকি দূর্বল পারিবারিক বন্ধন নাকি হতাশা নাকি অন্য কিছু !!
প্রশ্ন হলো আত্মহত্যাই কি সব কিছুর সমাধান? জীবনে চলতে গেলে বাঁধা~বিপত্তি তো আসবেই। অর্থাৎ বাঁধা~বিপত্তি উত্তোরণের পরেই তো সুখ। এটাই তো স্বাভাবিক। কিন্তু দুঃখ/হতাশা আসলেই জীবনের মত এত গুরুত্বপূর্ণ একটি সম্পদকে আত্মহত্যার মাধ্যমে বিলীন করা আসলে কতটা যৌক্তিক ?
জীবন তো একটাই। আমরা পৃথিবীতে এসেছি যেমন একা তেমনি আমাদের মৃত্যুবরণও করতে হবে একা। জীবনের সকল বাঁধা~বিপত্তিও কিন্তু অতিক্রম করতে হয় নিজেকেই। তাই, কারো ওপর নির্ভর না করে নিজেকে আত্মনির্ভরশীল হিসেবে তৈরী করুন। এর মানে নয়, নিজেকে আত্মীয়~স্বজন থেকে বিচ্ছিন্ন করবেন !! আত্মীয়~স্বজনের সাথে অবশ্যই সদ্ভাব রাখতে হবে। তবে, পুরোপুরি নির্ভরশীল নয়।
কারণ স্বামী/স্ত্রী/ছেলে/মেয়ে/ভাই/বোন প্রত্যেকের ভিন্ন ভিন্ন জীবন। ব্যক্তি স্বার্থে আঘাত হানলে কিংবা জীবনের প্রয়োজনে আপনার সাথে সম্পর্ক ছেদ করতে তাঁরা একটুও দেরী করবে না, যেমনটা তাঁরা ভুলেও যাবে আপনার মৃত্যুর ঠিক ৪০ দিনের মধ্যে, তা আপনি যত গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিই হোন না কেন। অপরদিকে, জীবনের একটা সময় আসবে যখন সন্তানসহ পরিবারের সবাই যার যার মতই ব্যস্ত হয়ে পড়বে এবং একই সাথে আপনার পরিবারে আপনার গুরুত্বও কমতে থাকবে ডাবল গতিতে। এগুলোই বাস্তবতা ! এই বাস্তবতা যত তাড়াতাড়ি আমরা বুঝব, তত তাড়াতাড়িই তা হবে আমাদের জন্য মঙ্গলজনক।
তাই, পরিবারের কোন সদস্য বা বিশেষ ব্যক্তির প্রতি অভিমান করে আত্মহত্যা/আত্মহনন নয়, জীবনটাকে ভালবাসুন, নিজেকে সময় দিন, নিজের পছন্দের কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকুন, নিজের জন্য পৃথক ভূবন তৈরী করুন। হতাশাগ্রস্ত না হয়ে স্বাভাবিক গতিতে জীবনটা পরিচালনা করুন। দেখবেন দুঃখের পরেই সুখ আসবে, অপেক্ষা শুধুমাত্র সময়ের। ভাল থাকুক পৃথিবীর সকল মানুষ।
বি:দ্র: ব্যক্তিগত মতামত। আপনার মতামত ভিন্ন থাকতে পারে।
লেখক: নাসির রঞ্জু
আপনার মন্তব্য লিখুন