৫২’এর ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে ৭১’এর মুক্তিযুদ্ধ বা পরবর্তীতে বিভিন্ন গণ আন্দোলনে এদেশের নারীরা জোড়ালো ভূমিকা পালন করেছে। মুক্তিযুদ্ধে আমাদের দেশের নারীদের সক্রিয় অংশগ্রহণ ছাড়াও প্রায় ২ লক্ষ মা-বোনের সম্ভ্রমহানি হয়। এতো বেশি সংখ্যক নারীর সম্ভ্রম হানির পিছনে মূল কারণ ছিলো, এদেশের পুরুষগণ সে সময়ে নারীদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে, আর এদেশের কিছু স্বার্থপর, বেঈমান পুরুষ তখন সুন্দরী মা-বোনদের পাকিদের হাতে তুলে দিয়ে ধর্ষণে সহায়তা করেছে। আজ স্বাধীনতা দিবসের এই মহালগ্নে সেই সকল ত্যাগী নারীদের বিনম্র শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি।
মুক্তিযুদ্ধ স্বচক্ষে দেখার সৌভাগ্য আমার হয়নি। তবে তথ্য-উপাত্ত থেকে যতটুকু জেনেছি তাতে এই নির্যাতিত নারীদের আমাদের রাষ্ট্র, সমাজ, নিকট আত্মীয় এমনকি পরিবার কেউই উপযুক্ত মর্যাদা দেয়নি, এমনকি আশ্রয়ও দেয় নি। তাই সেই ধর্ষণের পুরো দায় নারীকে একাই বহন করতে হয়েছে। তাদের বীরাঙ্গনা থেকে মুক্তিযোদ্ধা খেতাব দিতেও এ জাতির ৫০ বছর লেগেছে। আজ মুক্তিযোদ্ধারা বিভিন্ন ধরনের সুযোগ-সুবিধা, সম্মান পাচ্ছেন। তারা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান, সেলুট জানাই (যদিও এদের সঠিক তালিকা জাতি কখনও পাবে না, এখন আর সম্ভবও নয়)। একটু ভেবে দেখুন, এদেশের কোনো রাজপথতো দূরের কথা, কোনো গলির নামকরণও কোনো বীরাঙ্গনার নামে নেই, যদিও আমাদের এই ঢাকা শহরে ভূতের নামেও গলি রয়েছে। মনে হচ্ছে, সে সময়ে নারীরা ইচ্ছাকৃত ভাবে দলে দলে পাকিদের দ্বারা ধর্ষিত হয়েছে। স্মরণযোগ্য, ইচ্ছাকৃত দৈহিক মিলনের নামতো ধর্ষণ নয়। তাহলে কেন এই অবহেলা, কেন এই অবমূল্যায়ন? শুধুই নারী বলে?
আপনার মন্তব্য লিখুন